ম্যালওয়্যার এখন যেকোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী

by 1:56 AM 0 comments


antivirus-protection

সাইবার হামলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর প্রতিরোধেও নিয়মিত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। আর এ প্রতিরোধ ভাঙতেই উন্নত ও অত্যাধুনিক ম্যালওয়্যার ব্যবহার শুরু করেছে সাইবার অপরাধীরা। বর্তমানে যেসব ম্যালওয়্যার শনাক্ত হচ্ছে, তা আগের তুলনায় অনেক সৃজনশীল উপায়ে তৈরি হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত বি ইনসাইড টেকনোলজি সামিটে (বিআইটিএস) ম্যালওয়্যার সম্পর্কে এমন তথ্যই জানান সাইবার বিশেষজ্ঞরা। খবর পিসি ম্যাগ।

সাইবার হামলার কারণে বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয় বাড়ছে। হামলা থেকে গ্রাহক ও নিজেদের তথ্য রক্ষা করতে সাইবার নিরাপত্তা খাতে ব্যয় বৃদ্ধির কোনো বিকল্পও নেই প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে। কিন্তু নিরাপত্তা বাড়াতে যেখানে ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে, সেখানে হামলার অনুষঙ্গও উন্নয়ন করছে সাইবার অপরাধীরা। এতে হামলা প্রতিরোধ আরো কষ্টসাধ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে, সাইবার অপরাধীরা এমন সব অ্যাপের মধ্যে ম্যালওয়্যার যুক্ত করছে, যেগুলো অ্যান্ড্রয়েডের ব্যবহারযোগ্য খুবই পরিচিত অ্যাপ। এ কারণে বিশেষজ্ঞরা সাইবার হামলা থেকে সুরক্ষিত থাকতে অপরিচিত অ্যাপ ডাউনলোড না করার যে পরামর্শ দিয়ে থাকেন, তাও টিকছে না। পরিচিত অ্যাপগুলোয় ম্যালওয়্যার ছড়ানোর কারণে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

সাইবার অপরাধীরা র্যানসামওয়্যার নামের বিশেষ ম্যালওয়্যারের উন্নয়ন করছে। র্যানসামওয়্যার বলতে সেসব ক্ষতিকর সফটওয়্যারকেই বোঝায়, যার মাধ্যমে অপরাধীরা গ্রাহকের তথ্য হাতিয়ে নিয়ে অর্থের বিনিময়ে তা আবার গ্রাহককে সরবরাহ করে। এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে সাইবার অপরাধীরা বিপুল অর্থ উপার্জন করছে।

বিআইটিএসে সাইবার ও ম্যালওয়্যার বিশেষজ্ঞরা সংশ্লিষ্ট খাতের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ইস্যু, প্রচলন ও হামলা প্রতিরোধে করণীয় নিয়ে আলোচনা করতে একত্র হন। এ সম্মেলনের আয়োজন করে থাকে আইটি সিকিউরিটি কোম্পানি ইসেট। সম্মেলনে সাইবার ও ম্যালওয়্যার বিশেষজ্ঞরা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন করেন। ইসেটের পাশাপাশি মাইক্রোসফটসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞরাও উপস্থিত থাকেন। এ কারণে একে সাইবার নিরাপত্তা ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন হিসেবেই বিবেচনা করা হয়।

ইসেটের জ্যেষ্ঠ ম্যালওয়্যার গবেষক রবার্ট লিপোস্কি জানান, ম্যালওয়্যার শুধু পিসির জন্যই ক্ষতিকর নয়। সেলফোনের জন্যই এটি বড় ধরনের হুমকি। বিশেষ করে অ্যান্ড্রয়েডের জন্য। তিনি আরো বলেন, ‘ম্যালওয়্যার তৈরিকারকরা এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি সৃজনশীল। তারা বিভিন্ন ব্যবস্থায় হামলা চালিয়ে সফল হওয়ায় আরো বেশি উত্সাহী হয়ে উঠছে।’

বিআইটিএসে তিনি আরো জানান, ডাবসম্যাশ ও মাইনক্রাফটের মতো অ্যান্ড্রয়েডভিত্তিক গেমগুলোয় অপরাধীরা বিভিন্ন ধরনের ম্যালওয়্যার ছড়াচ্ছে। গেমের মাধ্যমে গ্রাহকরা অজান্তেই এ ধরনের ম্যালওয়্যার ইনস্টল করেছেন প্রায় পাঁচ লাখ বার।

অ্যান্ড্রয়েড ম্যালওয়্যারগুলোর কারণে গ্রাহক নিয়মিতই আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, র্যানসামওয়্যার ইনস্টলের কারণে গ্রাহকের ফোনের নিয়ন্ত্রণ চলে যাচ্ছে অন্যের হাতে। এছাড়া স্ক্রিন লক হওয়া, তথ্যে প্রবেশ করতে না পারার মতো ঘটনা ঘটছে নিয়মিত। এ সমস্যা থেকে রেহাই পেতে গ্রাহককে ৫০০ ডলার পর্যন্ত অপরাধীকে পরিশোধ করতে হচ্ছে। ম্যালওয়্যারের ধরন সৃজনশীল হওয়ার কারণে একে আটকে রাখা যাচ্ছে না। ফলে আক্রান্তের হার সময়ের সঙ্গে বাড়ছে।

মাইক্রোসফটের ম্যালওয়্যার প্রটেকশন সেন্টারের পরিচালক ডেনিস ব্যাচেলডার ম্যালওয়্যারের ইকোসিস্টেমে চারটি প্রধান অংশ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। এগুলো হচ্ছে, ক্রাইম সিন্ডিকেট, ম্যালওয়্যার সাপ্লাই চেন, অ্যান্টিম্যালওয়্যার ভেন্ডর ও অ্যান্টিম্যালওয়্যার ইকোসিস্টেম। এর মধ্যে ম্যালওয়্যার সাপ্লাই চেন ধ্বংসে মাইক্রোসফট কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

ম্যালওয়্যারের অস্তিত্ব যখন থেকে টের পাওয়া গেছে, তার পর থেকেই এ ব্যবস্থার প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে মাইক্রোসফট। সাপ্লাই চেন ধ্বংসের পাশাপাশি জড়িতদের আটক ম্যালওয়্যার ছড়ানো প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।

Unknown

Developer

Cras justo odio, dapibus ac facilisis in, egestas eget quam. Curabitur blandit tempus porttitor. Vivamus sagittis lacus vel augue laoreet rutrum faucibus dolor auctor.

0 comments:

Post a Comment